মোঃ শাহজালাল, বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুয়া রিপোর্ট ও বিভ্রান্তিকর চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসাইন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বরগুনা পৌরসভার কলেজ ব্রাঞ্চ রোড এলাকার বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান মাসুম তালুকদার (৬৫) গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার বড় মেয়ে মোমেনা আক্তার এশা*(৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা) জ্বরে আক্রান্ত হলে দ্রুত বরগুনার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষার নামে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে ভুল ও বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট সরবরাহ করা হয়। ওই রিপোর্টের বরাত দিয়ে আমাদের বলা হয় আমার মেয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত এবং সিজার অপারেশনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্কে পড়ি।
পরিস্থিতি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় একই দিন তিনি মেয়েকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রিপোর্টে দেখা যায়, তার মেয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত নন।
ফলে স্পষ্ট হয় যে, পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের রিপোর্ট সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তিকর। মিজানুর রহমানের অভিযোগ এ ধরনের ভুয়া রিপোর্ট ও মিথ্যা চিকিৎসা পরামর্শ শুধু রোগীর জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে না বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নষ্ট করছে।
অভিযোগে হাসপাতালের ডা. নুরছালী, ডা. নাজমা ও ম্যানেজার চিন্ময় এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে পরামর্শ শেষে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করতে কিছুটা সময় লেগেছে।
এ বিষয়ে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে একটি চক্র এসব করছে।
মিজানুর রহমান মাসুম তালুকদার বলেন,হয়রানির শিকার হয়েছি, সে অভিজ্ঞতা আর কোনো পরিবার যেন না পায় এ জন্য প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার দাবি করছি।
বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক এসোসিয়েশন বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি মোঃ সালেহ মাহমুদ সুমন শরীফ বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ মুঠোফোনে বলেন, এই ধরনের ভুয়া রিপোর্ট প্রকাশের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

