শাহীনূর রহমান,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৯ নং রায়পুর ইউনিয়নে গভীর রাতে দেহন বাজারে ৩০০( তিনশত) বস্তা টিএসপি সার বোঝাই ট্রাকটি জব্দ করেছে স্থানীয়রা।ট্রাক ফেলে পালিয়ে যান চালক, হেলপার। পরে সার বোঝাই ট্রাক সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।ঠাকুরগাঁওয়ে টিএসপি সার নিয়ে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, সরকারিভাবে সারের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। অন্যদিকে, প্রশাসন বলছে তারা এই সংকট মোকাবেলায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
টিএসপি সারের সরকারি দাম প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ১৩৫০ টাকা হলেও তাদের কাছ থেকে ১৮০০ টাকারও বেশি নেওয়া হচ্ছে। একই চিত্র অন্যান্য সার, যেমন ডিএপি এবং এমওপির ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রে বিক্রেতারা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু সরকারি মূল্যের রসিদ দিচ্ছেন অথবা কোনো রসিদই দিচ্ছেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে সার বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, ডিলাররা সার উত্তোলন করে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন, ফলে সাধারণ কৃষকের হাতে সার পৌঁছাচ্ছে না।
প্রশাসনের বলছে সারের পর্যাপ্ত মজুদ আছে।কিন্তু কি কারনে এবং কোন সিন্ডিকেটের দ্বারা তারা এই সারগুলো তাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে না তা আমরাখতিয়ে দেখছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সার মনিটরিং কমিটির মতে, জেলায় চাহিদামাফিক সার মজুদ রয়েছে। জুলাই মাসে টিএসপি সারের বরাদ্দ ছিল ১৪০৬ মেট্রিক টন, যার বেশিরভাগই ডিলাররা উত্তোলন করেছেন।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে যে, বরাদ্দকৃত সারের একটি বড় অংশ পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়ের চা-বাগানগুলোতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর ফলেও জেলায় সারের সংকট দেখা দিচ্ছে। প্রশাসন বলছে, তারা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের গুদামে অভিযান চালিয়ে সার জব্দ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সম্প্রতি একটি বাড়ি থেকে প্রায় ৯৪৭ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি বলছে, সরকারি মজুদ থাকা সত্ত্বেও কিছু অসাধু চক্রের কারণে কৃষকেরা সারের সংকট এবং অতিরিক্ত দামের শিকার হচ্ছেন। প্রশাসন এই অনিয়ম রোধে কঠোর নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

