এইচ এম সাগর (হিরামন) খুলনা:
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের সরকারি বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকার সিসি ক্যামেরা অধিকাংশই নষ্ট বলে অভিযোগ উঠেছে। আর যেগুলো সচল রয়েছে তার অধিকাংশই ক্যামেরা অতি দুর্বল মানের। ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যায় এটা সিসি ক্যামেরা- না অন্য কিছু। সম্প্রতি চুরি হওয়া সাংবাদিকের একটি মোটরসাইকেল সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ছবিতে চোরের চেহারা চেনা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন, তাহলে এতো টাকার ক্যামেরা গেল কোথায়! কি পরিমান লুটপাটের রাজত্ব চলছে উপজেলা দপ্তরে। সাধারণ মানুষের আস্তা হারিয়ে যাচ্ছে এসকল সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্তৃপক্ষর নিকট থেকে। আবার অনেকে বলছেন, এসব চোর সিন্ডিকেটের সাথে তাহলে কি জড়িত রয়েছে এসকল অফিসের কিছু দুর্নীতি পরায়ন কর্মচারী কর্মকর্তারা? ইতোমধ্যে বেশকিছু মোটরসাইকেল উপজেলা থেকে চুরি সংগঠিত হলেও তার কোন হদিস করতে পারিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসব চোর সিন্ডিকেটরা রয়েছে ধোঁরাছোয়ার বাইরে। থানা পুলিশ চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক করে আদালতে চালান করার কিছুদিন পর তারা জামিনে বের হয়ে এসে পুনোরায় তাদের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা খায়রুল বাশার বলেন, এদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুঃখজনক ঘটনা হলেও সত্য যে, বেশ কিছুদিন আগে বটিয়াঘাটা উপজেলা ভূমি অফিসের তালা ভেঙে রহস্যজনক ভাবে একটি চুরি সংগঠিত হয়। অথচ ওই চুরির ঘটনায় এসিল্যান্ড অফিসের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করা হয়নি। নাইটগার্ড কে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। ধারণা করা হচ্ছে,ওই চুরির ঘটনার সাথে এসিল্যান্ডের অফিসের কতিপয় কিছু অসাধু কর্মচারী কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারে! তাদের যোগসাজোষে রহস্যজনক চুরির নাটক সাজানো হয়েছিল বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার বরাদ্দকৃত সিসি ক্যামেরা গুলো অধিকাংশই নষ্ট। সচেতন মহল বলছে তাহলে এই ক্যামেরার টাকাগুলো গেল কোথায়? এ বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হলে তারা তথ্য দিতে তালবাহানা এবং গড়িমসি করেন। কেউ কেউ আবার বলেন,আইলা সহ বিভিন্ন ঝড়ে ক্যামেরা গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে কিছু কিছু ক্যামেরা সংস্কার করা হয়। কিন্তু পরে সেগুলো আর খোঁজখবর নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তান্নি বলেন,গাড়ি চুরির ঘটনা একটি দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু সিসি ক্যামেরাগুলো তো সচল থাকার কথা। কিন্তু কি কারণে এগুলো বন্ধ রয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। বটিয়াঘাটা নবাগত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শোয়েব শাত-ঈল ইভান বলেন, সরকারি ভাবে বরাদ্দকৃত কোন সিসি ক্যামেরা নেই। আমাদের নিজস্ব খরচে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। রহস্যজনক চুরির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার যোগদানের আগের ঘটনা। এ বিষয় আগের অফিসার ভালো বলতে পারবেন। সূত্রে প্রকাশ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ অফিস প্রধানের সহযোগিতায় বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকার সিসি ক্যামেরা গুলো লাগানো হয়েছিল নিম্নমানের। উপজেলা পরিষদের সিএ মো: হারুন বলেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের জন্য আইপি সিসি ক্যামেরার জন্য ক্রয়করা হয়েছিল ৪ লাখ টাকা। উপজেলাবাসি সহ সচেতন মহল জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

