• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • অঘোষিত এসপির রাজত্বে কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়ন 

     swadhinshomoy 
    16th Sep 2025 5:26 pm  |  অনলাইন সংস্করণ Print

    সালমান ইমন: রামগতি-কমলনগর(লক্ষীপুর) প্রতিনিধি

    এসপি মিজানুর রহমানের প্রভাবকে পুঁজি করে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে হোসেন ওরফে ‘সমস্যা’ নামের এক ব্যক্তি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
    স্থানীয় কৃষক, জেলে, স্কুলশিক্ষকসহ শতাধিক পরিবার তার দ্বারা চরমভাবে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন বলে অভিযোগ তাদের।
    অভিযোগ রয়েছে, হোসেন তার দুই মেয়েকে নোয়াখালী পিবিআইয়ের তৎকালীন এসপি ও বর্তমান পঞ্চগড়ের এসপি মো. মিজানুর রহমান মুন্সির বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে পাঠিয়ে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। সেই সম্পর্কের ছত্রছায়ায় তিনি এলাকায় বেপরোয়া ও ভয়ঙ্কর প্রতারকে পরিণত হন।

    অভিযুক্ত হোসেন চর জগবন্ধু এলাকার সমস্যা বাড়ির মৃত ইউসুফের ছেলে। বর্তমানে চর কাদিরা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে বাদামতলি এলাকায় বসবাস করেন।
    স্থানীয়রা জানান, হোসেন এলাকায় একের পর এক জমি দখল, বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, হামলা এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। তার বিরুদ্ধে অন্তত ডজনখানেকের বেশি মামলা ও একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে।

    সরজমিনে বাদামতলি ঘুরে জানা যায়, প্রায় এক দশক আগে হোসেন মেঘনার ভাঙনে সব হারিয়ে শূন্য হাতে আশ্রয় নেয় স্থানীয় বাসিন্দা মোমিনের বাড়িতে।
    ওই এলাকায় প্রচুর কৃষি জমি থাকায় মেঘনার ভাঙনের শিকার হয়ে অনেক মানুষ ঘর বাড়ি করার জন্য সেখানে জমি কিনতে যায়। এই সুযোগে হোসেন জমির ব্যবসা শুরু করেন। তার নিজের কোনো জমি না থাকলেও শুরু করে জমি ব্যবসার আড়ালে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড। জমি কিনতে আসা ক্রেতাদের তিনি অন্যের জমি ও বসতবাড়ি দেখিয়ে নিজের মতো দরদাম করে বিক্রি করে দেয়। পরে সেই জমি জোরপূর্বক দখল করে ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেন এবং প্রকৃত মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। এ সমস্ত প্রতারণা ও জবরদখলের কাজে তাকে নেপথ্যে সহযোগিতা করেন নোয়াখালী পিবিআইয়ের তৎকালীন এসপি ও বর্তমান পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। হোসেন মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ইচ্ছেমতো আসামী করতেন।  সেইসব মামলার তদন্তের দায়িত্ব নোয়াখালী পিবিআই এসপি মিজানুর রহমানের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেন। এসপি মিজান কোনো তদন্ত না করেই হোসেনের কথামতো রিপোর্ট দিতেন। ফলে নির্দোষ মানুষ জেল খাটেন ও হয়রানি হন। এমনকি যে মোমিনের বাড়িতে হোসেন আশ্রয় নিয়েছে, তাকেও ছাড়েনি সে। মোমিনকে উচ্ছেদ করে তার বাড়িটি বিক্রি করে দেয় এবং পরে মোমিনের অন্যান্য জমিও দখলে নেয় হোসেন।
    এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক মো:বেলাল বলেন,আমি হোসেন থেকে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুল্যে ৯৬ শতক জমি ক্রয় করি। এবং ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বায়না চুক্তি করি। কিন্তু ২ বছর পরেও জমি ও টাকা বুঝিয়ে না দিলে হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করি। মামলার তদন্ত দেয়া হয় জেলা ডিবি কে। এসপি মিজানের সুপারিশে ডিবি আমার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দেয়।পরে ওই রিপোর্টের বিরুদ্ধে আমি আদালতে নারাজি দিলে আদালত আমার আবেদন আমলে নেয়। এরপর হোসেন তার বিপদ বুঝতে পেরে আমার বিষয়টা সমাধান করবে বলে তার নিজের লোক দিয়ে একটি শালিশ বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে আমার কাছে ৮ লাখ টাকা পাবে বলে একটি স্ট্যাম্প সৃজন করে। সেই স্ট্যম্প দিয়ে আদালতে আমার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার তদন্ত দেয় নোয়াখালীর পিবিআইকে। নোয়াখালীর পিবিআই’র এসপি মিজানুর রহমানের নির্দেশে তদন্ত ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেয়। পরে ওই মামলায় আমাকে জেলে যেতে হয়। টাকা, জমি কিছুই আর পাইনি।

    আরেক ভুক্তভোগী আরজু হাওলাদার বলেন, ২০২০ সালে বাদামতলি বাজারের পশ্চিমে সাড়ে ৩৯ শতক জমি ক্রয় করি। ওই জমিতে ঘর করার জন্য ঘরের মালমাল সেখানে রাখি। হোসেন তার শ্যালক যুবলীগ নেতা বাবুল ও তার বাহিনী দিয়ে আমার জমি দখলের জন্য সেই মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আমি যেন ঘরের কাজ না করতে পারি হোসেন আদালতের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারি করে। পরে উপজেলা ভূমি অফিস তদন্ত করে আমার পক্ষে রায় দেয়। এরপর সে আবারো আদালতে গিয়ে মামলা করে হয়রানি করে। তার পক্ষে এসপি মিজান কাজ করতেছে। আমরা কোন আইনি সহযোগিতা পাইনা।

    চর কাদিরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: হারুন বলেন, হোসেন সমস্যা অত্র এলাকার শত শত মানুষকে  হয়রানি করছে। মানুষে মানুষে ভেজাল লাগিয়ে দিয়ে সে মামলা করায়। সেই মামলায় সাক্ষী হয় সে। এলাকার শত শত মানুষের বিরুদ্ধে প্রায় ২ ডজন মামলা করেছে সে নিজে। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই মামলার আসামী হতে হয়। আমিও আসামী হয়েছি।
    তিনি আরো বলেন, নোয়াখালীর পিবিআইয়ের এসপির বাসায় হোসেনের মেয়ে কে কাজের মেয়ে হিসেবে দিয়েছে। ওই সুবাধে হোসেন মামলা করে মামলার তদন্ত দিতো নোয়াখালী পিবিআইকে। পিবিআই এসপি মিজান তদন্ত ছাড়াই হোসেনের কথামতো তদন্ত রিপোর্ট দিতো। এখনো এসপি মিজান  হোসেনের জন্য সকল জায়গায় তদবির করে। তাই  হোসেনের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
    অভিযুক্ত হোসেন সমস্যার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে এবং হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
    হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে
    কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হোসেনের বিরুদ্ধে কমলনগর থানায় কয়েকটি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এছাড়া তার বিষয়ে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি।

    অভিযুক্ত সাবেক নোয়াখালী জেলার পিবিআই এসপি ও বর্তমান পঞ্চগড় জেলার এসপি মো: মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, হোসেনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ বা মামলা থাকলে সেখানে জেলা প্রশাসন আছে,পুলিশ প্রশাসন আছে তারা দেখবে কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা। হোসেনের মেয়ে আপনার বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে আছে কিনা এবং নোয়াখালী পিবিআইতে থাকাকালীন হোসেনের মামলার তদন্ত রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন এবং এবিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।

    লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার মো: আকতার হোসেনকে এ বিষয় জানতে একাধিকবার মোবাইল ফোনে,হোয়াটসঅ্যাপ ফোন করে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

    উপরের নিউজটি মাঠ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে করা এ বিষয়ে কোন দ্বিমত থাকলে প্রমাণসহ dailyswadhinshomoy@gmail.com এ ইমেইল করে আমাদেরকে জানান অথবা আমাদের +88 01407028129 নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপ করুন।
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2025
    S M T W T F S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    282930