ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯টি আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করে তার তালিকা আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৪ মার্চের মধ্যে এই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষকে আদেশে বলা হয়েছে।
এদিকে এই রিট মামলায় ভর্তি বাতিল হওয়া ১৬৯ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে ৩৬ জন পক্ষর্ভুক্তির আবেদন করেছেন।
বুধবার (৬ মার্চ) ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিলের প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে স্কুলের পক্ষে আইনজীবী রাফিউল ইসলাম ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। কাজী মাইনুল হাসান বলেন, শূন্য আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করে তার তালিকা হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে পৃথক পৃথক চিঠি দিয়ে ভর্তি বাতিলের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। একইসঙ্গে ভর্তি বাতিলের বিষয়টি চিঠি দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে অবহিত করেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী।
চলতি বছর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম শ্রেণিতে বিধি বহির্ভূতভাবে ১৬৯ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছিলো। যাদের জন্মসাল ছিল ২০১৫ ও ২০১৬ সাল। কিন্তু মাউশির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে জন্মসনদ রয়েছে এমন শিক্ষার্থীরাই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। কিন্তু এই ১৬৯ শিক্ষার্থীর অভিভাবক ২০১৫ ও ২০১৬ সালের জন্মসনদ দিয়ে তাদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আবেদন করেন। পরে তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৫ সালে সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন এবং ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়।
চলতি শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে অনিয়ম হয়েছে এবং এই অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে মাউশির মহাপরিচালক বরাবর একটি আবেদন দেন পারভীন আক্তার নামে একজন অভিভাবক। কিন্তু আবেদন নিষ্পত্তি না করায় হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। হাইকোর্ট পারভীন আক্তারের আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে মাউশির মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া সকল শিক্ষার্থীর তথ্য চাওয়া হয়।
ওই তথ্য পর্যালোচনা করে মাউশি জানতে পারে, ভিকারুননিসায় ১৬৯ জন শিক্ষার্থী বিধি-বহির্ভূতভাবে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। এরপরই এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের জন্য ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরীকে ২২ ফেব্রুয়ারি চিঠি দেন মাউশির মহাপরিচালক।