আল রোকন,রিপোর্টার কুমিল্লা:
লালমাই থানায় দুটি ডাকাতি ঘটনা সংগঠিত হয়। এর প্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সমগ্র জেলায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। এই নিরাপত্তা জোরদার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোপন গোয়েন্দা সূত্র এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর সহযোগীতায় জানা যায়, কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরাবাজার থানা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল একত্রিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাঙ্গরাবাজার থানা এলাকায় পুলিশি টহল জোড়দার থাকায় ডাকাতদল ডাকাতি করতে পারে নাই। তখন ডাকাত দলটি সিদ্ধান্ত নেয় তারা দেবিদ্বার এলাকায় ডাকাতি করবে। গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় জানা যায় একটি কালো রঙের হাইচ মাইক্রোবাস (রেজিঃ ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৭১৯৭) যোগে ১৩ জন ডাকাত সদস্য কোম্পানীগঞ্জ হয়ে কুমিল্লার দেবিদ্বার এর দিকে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত রাত ০৪.০০ ঘটিকার সময় কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ভিংলাবাড়ী এলাকার কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর জেলা গোয়েন্দা শাখা ও দেবিদ্বার থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি চেক পোষ্ট স্থাপন করা হয়। হাইচ গাড়িতে থাকা ডাকাতদল চেকপোস্টের কাছে আসলে পুলিশের উপস্থিতি দেখে গাড়ির দরজা খুলে ও গ্লাস ভেঙ্গে বাহির হয়ে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে ১৩ জন ডাকাত গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কার্যক্রমে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। ডাকাতদের জিজ্ঞাবাদে তারা স্বীকার করে সাম্প্রতিক সময়ে গঠা লালমাই এলাকায় সংগঠিত ০৩ টি ডাকাতি, বরুড়া এলাকায় ০১ টি ডাকাতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানা এলাকায় ০১ টি ডাকাতি গ্রেফতারকৃত ডাকাতদলটি সংগঠন করে।
উদ্ধারকৃত মালামাল ১। ০৪ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল। ২। ০১ টি স্বর্ণের আংটি; ৩। ০১ জোড়া রুপার নুপুর; ৪। ০১ টি স্বর্ণ রাখার ছোট লাল বক্স; এবং ৫। নগদ ২০,০০০ টাকা।
১। ডাকাত মোঃ মনির হোসেন (৪০), পিতা-মৃত আবুল হাশেম, মাতা-হাজেরা বেগম, সাং-উড়িরচর (খা বাড়ী), ইউপি-বাশঁকেক, থানা-মুরাদনগর, জেলা-
কুমিল্লা। পূর্বে ২১টি মামলা আছে; ২। শাহ আলম দুলাল (৪৮), পিতা-মৃত সোনা মিয়া, মাতা-মৃত রমিজা বেগম, সাং-নবীয়াবাদ, ১৫নং বড় কামতা ইউপি, থানা-দেবিদ্বার, জেলা-কুমিল্লা
৩। মোঃ মামুন মিয়া (২৪), পিতা-ফরিদ মিয়া, মাতা-আনোয়ারা বেগম, সাং-সিধলাই ইউপি, থানা-ব্রাহ্মনপাড়া, জেলা-কুমিল্লা;
৪। মাহবুব আলম (৩৮), পিতা-মোখলেছুর রহমান, মাতা-মাফিয়া আক্তার, থানা-ব্রাহ্মনপাড়া, জেলা-কুমিল্লা:
৫। আলমগীর হোসেন (৩০), পিতা-ইলিয়াছ, মাতা-জানু বিবি জয়নব বিবি, সাং-বিজয়পুর, বারপাড়া ইউপি, থানা-সদর দক্ষিণ, জেলা-কুমিল্লা: ৬। মোঃ আল আমিন (৩২), পিতা-মৃত নসু মিয়া, মাতা-লায়লা বেগম, সাং-জুরাইন মাইকপাড়া, ০৩নং ইউপি, থানা-বুড়িচং, জেলা-কুমিল্লা। পূর্বে ০৭টি
৭। মোঃ কামাল হোসেন (৩২), পিতা-মৃত আব্দুর রব, মাতা-মৃত আছিয়া, সাং-মহেশপুর, কাজী বাড়ী, ০৩নং ওয়ার্ড, থানা-বরুড়া, জেলা-কুমিল্লা: ৮। শরীফ মোশারফ শরীফ (৩২), পিতা-তাজুল ইসলাম, মাতা-আরজা বেগম, সাং-কংগাই, ০৩নং ওয়ার্ড, ১০নং গল্লাই ইউপি, থানা-চান্দিনা, জেলা- কুমিল্লা:
৯। মোঃ সুমন (৩৩), পিতা-আব্দুল খালেক, মাতা-মাসুমা, সাং-চিলোড়া, ৯নং ওয়ার্ড, বারড়া ইউপি, থানা-চান্দিনা, জেলা-কুমিল্লা। পূর্বে ১৩টি মামলা আছে:
১০। মোঃ খোকন (৪০), পিতা-আব্দুল করিম, মাতা-হালিমা বেগম, সাং-বাশতলী নোয়াবাড়ী, খোশবাশ ইউপি, থানা-বরুড়া, জেলা-কুমিল্লা। ০৯টি মামলা আছে:
১১। আল আমিন (২৫), পিতা-মুবিন, মাতা-জাহানারা বেগম, সাং-দক্ষিণ হোসেনপুর, খোসবাশ ইউপি, থানা-বরুড়া, জেলা-কুমিল্লা:
১২। মোঃ সোহেল (২৬), পিতা-আব্দুল খালেক, মাতা-মাসুমা সাং-চিরাল্লা/চিলোড়া, উত্তর পাড়া, ৯নং ওয়ার্ড, বারড়া ইউপি, থানা-চান্দিনা, জেলা- কুমিল্লা। ১৫টি মামলা আছে;
১৩। মোঃ আব্দুল আউয়াল (৫০), পিতা-কালা মিয়া, মাতা-ফিরোজা খাতুন, স্ত্রী-পারুল, সাং-হিরাকাশী, আকুবপুর ইউপি, থানা-বাঙ্গরাবাজার, জেলা- কুমিল্লা। ০১টি মামলা আছে এবং
১৪। নিহার বিশ্বাস (৪৮), পিতা-নির্মল বিশ্বাস, মাতা-সুলেখা বিশ্বাস, সাং-সন্তোপুর, থানা-মতলব উত্তর, জেলা-চাঁদপুর।
দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রের সদস্যরা ডাকাতি করে আসছে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কসহ অন্যান্য এলাকায় পরিকল্পিতভাবে ডাকাতি অভিযান চালাত। গ্রেফতারকৃতরা মূলত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য হিসেবে পরিচিত। এই সফল অভিযানে কুমিল্লা জেলা পুলিশের দক্ষতা, গোয়েন্দা নজরদারি এবং সময়োপযোগী প্রদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত এবং সর্তক। তাই আমাদের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

