রুবেল ইসলাম, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড় যুগ পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে ‘বিএনসিসি ফি’ বাবদ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসির কার্যক্রম না থাকা সত্ত্বেও ভর্তি ফি-তে এ খাতের টাকা কেন রাখা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এখনো ‘বিএনসিসি ফি’ তালিকায় বিদ্যমান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৯টি ব্যাচ ভর্তি হয়েছে। প্রতি ব্যাচে গড়ে ১ হাজার শিক্ষার্থী ধরে হিসাব করলে, গত ১৯ বছরে বিএনসিসি ফি বাবদ আদায় করা হয়েছে প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা। কিন্তু এর কোনো কার্যকর ব্যয় শিক্ষার্থীরা দেখতে পাননি।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শওকত ইসলাম বলেন,
“ভর্তির সময় থেকে লক্ষ্য করছি বিভিন্ন খাতে ফি নেওয়া হয়, তার মধ্যে একটি হলো বিএনসিসি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসির কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তাহলে এই টাকা কোথায় যাচ্ছে? যদি গড়ে প্রতি ব্যাচে ১ হাজার শিক্ষার্থী থেকে ৪০ টাকা নেওয়া হয়, তাহলে প্রায় ৮ লাখ টাকা আদায় হয়েছে—এই টাকার হিসাব কোথায়?”
অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাজু আহমেদ এ বিষয়ে বলেন,
“ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনসিসি ও স্কাউটের জন্য ফি নেওয়া হয়। টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টেই জমা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বহনেই খরচ করা হয়। আলাদা কোনো ফান্ড আলাদা করে রাখা হয় না।”
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এ বিষয়ে ভিন্ন কথা জানান। তিনি বলেন,
“বিএনসিসি বাবদ আদায়কৃত ফান্ড এখন পর্যন্ত কোনো খাতে খরচ করা হয়নি। আমরা আসার পর থেকে রোভার স্কাউট কার্যক্রম শুরু করেছি এবং ইতোমধ্যে কয়েকটি কাজও সম্পন্ন করেছি। বিএনসিসি এখনো চালু হয়নি, তবে খুব শিগগিরই এটি চালু করা হবে। রোভার স্কাউটের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিএনসিসি কার্যক্রমও সামনে এগিয়ে নেওয়া হবে।”
এদিকে দীর্ঘ ১৯ বছরেও বিএনসিসি কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এবং নিয়মিত ফি নেওয়া অব্যাহত,শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ।

