মোঃ রেজাউল হক রহমত, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ এলাকায় চারদিন বন্ধ থাকার পর ফের চালু হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম। বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে জেলা পুলিশ সুপার এহতেশামুল হকের নির্দেশে ও নবীনগর সার্কেল এএসপির তত্ত্বাবধানে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে ফাঁড়িটি পুনরায় চালু করেন।
পুনরায় চালু হওয়া ফাঁড়িতে একজন এসআইকে ইনচার্জ এবং সাতজন কনস্টেবলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে ফাঁড়িতে আটক এক যুবক আব্দুল্লাহ (২৭) রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করলে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে ফাঁড়িটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে এবং সেনা মোতায়েন করে। নিহত আব্দুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা এবং আবুল মিয়ার ছেলে।
ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরদিন (৩০ সেপ্টেম্বর) তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়।
ফাঁড়ির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার সময় ওসি শাহিনুর ইসলাম বলেন,
“এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চলছে এবং যেই দোষী হোক, কোনো ছাড় পাবে না। আইনের শাসন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ জনগণের শত্রু নয়, বরং বন্ধু। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা শুধু পুলিশের একার দায়িত্ব নয়, এটি সমাজের প্রতিটি নাগরিকের সম্মিলিত দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন,
“মাদক এখন আমাদের সমাজে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এটি তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ী এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শুধু পুলিশের পক্ষে একা এই অভিশাপ দূর করা সম্ভব নয়। এর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব। কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাবশালী অবস্থানকেই এই অভিযানে ছাড় দেওয়া হবে না।”
স্থানীয়দের মাঝে পুলিশ প্রশাসনের এই উদ্যোগ আশার আলো জাগিয়েছে। তারা মনে করছেন, ন্যায়বিচার ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।

