নুর মোহাম্মদ কাকা:
আজ ০৬ অক্টোবর, বিশ্ব শিশু দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি পালিত হচ্ছে যথাযোগ্য মর্যাদা ও তাৎপর্যের সঙ্গে। এ বছরের প্রতিপাদ্য— “শিশুর কথা শুনব, শিশুর জন্য করবো কাজ।”
শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্থ-সবল বেড়ে ওঠা, নিরাপদ পরিবেশ, শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিত করা একটি রাষ্ট্র ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। শিশুরা কেবল সুরক্ষার দাবি রাখে না, বরং তাদের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি ও মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ একটি শিশু আজকের দিনে যতটা নিরাপদ ও ভালোবাসায় বেড়ে উঠবে, আগামী দিনে ততটাই সচেতন, দক্ষ ও মানবিক নাগরিক হিসেবে সমাজে অবদান রাখতে পারবে।
জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী প্রতিটি শিশুর রয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার, শিক্ষা গ্রহণের অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা ও খেলাধুলার অধিকার। বাস্তবে দেখা যায়, দারিদ্র্য, বাল্যবিবাহ, শিশু শ্রম, অপুষ্টি ও সহিংসতার কারণে অনেক শিশু আজও তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ফলে শিশুদের হাসি-খুশি শৈশব নষ্ট হচ্ছে, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বড় হুমকি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের কথা শোনা মানে শুধু তাদের মনের খোঁজ নেওয়া নয়, বরং নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে তাদের স্বার্থকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া। বিদ্যালয়, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র— সর্বত্র শিশুদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এই দিনে সরকার, বেসরকারি সংস্থা, সামাজিক সংগঠন ও গণমাধ্যম শিশুদের কল্যাণে নানা কর্মসূচি পালন করছে। র্যালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিশুদের অধিকার ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হচ্ছে।
সবশেষে বলা যায়—শিশু দিবস শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং আমাদের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত “প্রত্যেক শিশুর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনব এবং তাদের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নেব।” তাহলেই সম্ভব হবে সুন্দর, মানবিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

