• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • রূপকারের তুলির মায়াবী আঁচড়:  লাল ইটের সাম্রাজ্য ববি ক্যাম্পাসে শরতের শুভ্রতা 

     swadhinshomoy 
    04th Oct 2025 5:14 pm  |  অনলাইন সংস্করণ Print

    আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান , ববি প্রতিনিধিঃ

    শরতের আকাশ—এ তো শুধু নীলিমা নয়, এ যেন এক সুবিশাল, উন্মুক্ত ক্যানভাস, আর সেই ক্যানভাসের সামনে অদৃশ্য তুলি হাতে এক রূপকার। তাঁর তুলির ডগায় তখন শুধু আলো আর মেঘের কারুকাজ। নীল দিগন্ত জুড়ে তিনি তখন শুভ্র মেঘের মেলা বসাচ্ছেন। যেখানে সাদা তুলোর মতো মেঘের ভেলা ভেসে চলেছে কীর্তনখোলা নদীর গতিপথ ধরে। নদীর জলে সেই মেঘের প্রতিচ্ছবি, সেই আলোছায়ার লীলা, এক ঐশ্বরিক শান্তিতে ভরিয়ে তুলছিল চারপাশ।

    ​রূপকার তখন মগ্ন ছিলেন সেই আদিম সৌন্দর্যের সৃষ্টিতে। কিন্তু হঠাৎই তাঁর দৃষ্টি পড়লো এক আধুনিক বিস্ময়ের দিকে। নদীর পাড় থেকে কিছুটা দূরে, যেন প্রকৃতির মাঝেও এক দৃঢ়, রক্তিম অঙ্গীকারের প্রতীক। এ হলো এক লাল ইটের সাম্রাজ্য—যেখানে জ্ঞানালোকের শিখা প্রজ্বলিত, যেখানে সহস্র স্বপ্ন ডানা মেলেছে। ​বিশেষ করে, যখন বিকেলের রাঙা সূর্য তার শেষ বিদায়ী আলোটুকু এই লাল ইটের স্থাপত্যের আঙিনায় ঢেলে দেয়, তখন তা অগ্নিকণার মতো ঝকঝক করে ওঠে।

    ​রূপকার মুগ্ধ হলেন ৫৩ একরের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাসের গাম্ভীর্য দেখে। তিনি ভাবলেন, এই জ্ঞানালোকের তীর্থক্ষেত্র—এই লাল ইটের ক্যানভাস—প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের মাঝেও যেন কিছুটা অসম্পূর্ণ। এত দৃঢ়তা, এত গৌরবের পরেও যেন কোথাও একটা নৈসর্গিক কোমলতার অভাব।

    ​আর ঠিক তখনই, রূপকার যেন তাঁর অদৃশ্য তুলির শেষ, মায়াবী আঁচড়টি দিলেন। আলতো হাতে, স্নেহের পরশ বুলিয়ে এঁকে দিলেন কাশফুলের আলপনা। সেই সাম্রাজ্যের প্রবেশদ্বারে, সবুজ প্রান্তরে—যেখানেই চোখ যায়—সেখানেই এখন শুভ্রতার নীরব জয়গান। কাশফুলেরা যেন হাজারো সাদা পালকের ফোঁটা হয়ে ফুটে উঠলো, যা লাল ইটের স্থাপত্যের গর্বিত নীরবতার পাশে এক কোমল, মায়াবী হাসি ফুটিয়ে তুলল। দেখে মনে হয় ঋতু রাণী শরৎ  যেন ববি ক্যাম্পাসের জন্যই এই বিশেষ আয়োজন করেছে।”

    ​​রূপকারের আঁকা এই দৃশ্য দেখে যদি ভূমিপুত্র জীবনানন্দ দাশ আজ এই ক্যাম্পাসের ধারে এসে দাঁড়াতেন, তাহলে হয়তো এই দৃশ্য দেখে তাঁর মন ‘আবার আসিব ফিরে’-এর মতো কোনো চিরন্তন আকাঙ্ক্ষায় ভরে উঠত। কবি হয়তো বার বার ফিরে আসতে চাইতেন  রুপকারের এই শিল্পকর্মে।

    ​আর এই ঐন্দ্রজালিক দৃশ্যের টানেই যেন প্রতি বছর শরৎ এলেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী। লাল ইটের কাঠামো আর শুভ্র কাশফুলের এই বৈপরীত্য তাঁদের মনকে যেন এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়।

    ​বরিশালের শহর থেকে আসা এক দর্শনার্থী মুগ্ধ হয়ে বলেন,” ছবিতে,  ভিডিওতে অনেকবার দেখেছি এই কাশফুল তারপরও নিজ চোখে দেখার জন্য স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চলে এলাম,  সত্যিই দেখতে ছবির মতই সুন্দর।”

    অন্যদিকে, পূজোর ছুটিতে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী কাজি তাওহিদুল ইসলাম অভি বলেন, “প্রতিবছর অনলাইনে দেখি শরৎ এলেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় যেন তার অলংকার রূপে সেজে ওঠে। দেখে মনে হয় কাশফুলের এক স্বর্গরাজ্য। কে না চায় এমন সৌন্দর্যময়  জায়গায় একবার ঘুরে না আসতে! তাই ভাবলাম, ঢাকায় যাওয়ার পথে শহরের কোলাহলকে দূরে ঠেলে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে এই সৌন্দর্যটা উপভোগ করেই যাই।”

    শুধু যে বহিরাগতরাই দর্শনার্থী হন তা কিন্তু নয়, যারা এই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী আছেন তারাও অবসর সময়ে বের হন  চিরচেনা ক্যাম্পাসে কাশফুলের শুভ্রতা নিতে।

    তেমনি  ​বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী খাইরুল ইসলাম মাহিম বলেন, “এই কাশফুল আমাদের ক্যাম্পাসের ‘সফট পাওয়ার’। ক্লাসের ফাঁকে কিংবা বিকেলের অবসরে যখন এই কাশফুলের বুক চিরে হাঁটি, তখন যেন সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।  অগোছালো হলেও আমাদের ক্যাম্পাসের এই নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখে মানুষ দূর-দূরন্ত  থেকে ছুটে আসেন  যা দেখে সত্যিই গর্ববোধ হয়।”

    কাশফুলের এই দৃশ্য কেবল একটি ঋতু পরিবর্তন নয়, এটি যেন সেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাসের জন্য রূপকারের এক নীরব আশীর্বাদ। এই কাশফুলেরা যেন বরিশালের প্রকৃতির সঙ্গে এই জ্ঞানালোকের সাম্রাজ্যের এক চিরন্তন মৈত্রী বন্ধন গড়ে তুলেছে। তারা প্রমাণ করে, দৃঢ়তার মধ্যেও কোমলতার স্থান রয়েছে, আর কাঠিন্যের মধ্যে প্রেমের প্রকাশ।

    উপরের নিউজটি মাঠ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে করা এ বিষয়ে কোন দ্বিমত থাকলে প্রমাণসহ dailyswadhinshomoy@gmail.com এ ইমেইল করে আমাদেরকে জানান অথবা আমাদের +88 01407028129 নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপ করুন।
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    October 2025
    S M T W T F S
     1234
    567891011
    12131415161718
    19202122232425
    262728293031